নীরবতা একটা মেয়ের গভীর উচ্চারণ
নীরবতা – এক মেয়ের গভীর উচ্চারণ
লেখক: MD OSMAN GONI
আমার চারপাশটা যেন সবসময়ই ব্যস্ত।
হাসির শব্দ, প্রশ্ন, উত্তর, তর্ক, তাড়া—সব কিছুতেই ভরপুর এই শহর।
কিন্তু এই কোলাহলের মাঝেও আমি প্রায়শই নিজেকে খুঁজে পাই নিঃশব্দ হয়ে যেতে।
নীরবতা আমার জন্য কেবল একটি অবস্থা নয়, এটা যেন আমার ভেতরের কণ্ঠস্বর—যেটা কেউ শুনতে পায় না, কিন্তু আমি প্রতিটি মুহূর্তে শুনে যাই।
একজন মেয়ের নীরবতা কি আলাদা?
হয়তো হ্যাঁ।
কারণ ছোটবেলা থেকে মেয়েদের বলা হয়,
“চুপ থেকো”, “এমন কথা বলো না”, “তোমার তো শোভা পায় না”।
এই চুপ থাকার শিক্ষা যেন আমাদের মধ্যে একধরনের অভ্যেস তৈরি করে।
কিন্তু সেই চুপ থাকাটাই একসময় হয়ে যায় ভাষা।
আমি যখন চুপ থাকি, তখন শুধু ঠোঁট বন্ধ থাকে না—একটা পাহাড় সমান অনুভব জমে যায় বুকে।
আমার সেই একান্ত নীরব সময়গুলোতে...
আমি ভাঙি, আবার গড়ি।
ভেতরে কথা বলি, প্রশ্ন করি, কাঁদি—নিঃশব্দে।
আমার না-পাওয়া, আমার অসমাপ্ত চিঠিগুলো, আমার হারানো চাওয়া—সবকিছু যেন ভেসে বেড়ায় সেই নীরব মুহূর্তে।
এই সময়গুলোতে আমি আর কারো মেয়ে, স্ত্রী, বন্ধু, সহকর্মী নই—আমি শুধু আমি।
নীরবতার মাঝেও একধরনের আশ্রয় আছে
এই শহর যখন আমাকে বোঝে না, আমি তখন ছাদে উঠে রাতের আকাশ দেখি।
তারাদের দিকে তাকিয়ে আমার মনে হয়, কেউ যেন আমায় নিঃশব্দেই জড়িয়ে রাখছে।
আমি তখন কারো জন্য কিছু প্রমাণ করতে হয় না।
আমি কেবল নিজের মতো বাঁচি, নিঃশব্দে।
আমার মতো আরও অনেক মেয়ে আছে...
যারা চুপ থেকেও অনেক কিছু বলতে চায়।
যারা চোখের জল ফেলেও বলে না—“আমি কষ্টে আছি।”
যারা ভালোবাসে, কিন্তু বলে না—“তোমাকে ছাড়া চলতে পারবো না।”
তাদের জন্যই আমার এই লেখা।
যেন তারা বুঝতে পারে, তাদের নীরবতাও একটা ভাষা, এবং সেটা অমূল্য।
শেষ কথাঃ
আমি কথা বলি না মানে আমি অনুভব করি না—তা নয়।
আমি চুপ থাকি, কারণ আমার চুপ থাকা অনেক কথার চেয়ে বেশি সত্যি।